আওয়াজ ফাউন্ডেশন ও লিগ্যাল এইডের প্যানেল আইনজীবিদের মধ্যে এক ডায়ালগ সম্পন্ন হয়। ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ এর সহযোগিতায় ও আওয়াজ ফাউন্ডেশন’ এর উদ্যোগে বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এই ডায়ালগের মতবিনিময় সভায় লিগ্য্যাল এইডের প্যানেল আইনজীবি, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান,এনজিও ,মানবাধিকার সংস্থা, ট্রেড ইউনিয়ন ও নারী শ্রমিক অধিকার বিষয়ক প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধিরা ও উপস্থিত ছিলেন।প্রধান অতিথি হিসেবে (অনলাইনে জুমের মাধ্যমে) উপস্থিত ছিলেন রাজিয়া সুলতানা,সিনিয়র জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার, বিশেষ অতিথি বৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ,মোহাম্মদ এরশাদুল ইসলাম, লিগ্যাল এইড অফিস এসিসট্যান্ট, স্বপ্নীল ব্রাইট ফাউন্ডেশরে নির্বাহী পরিচালক মো: আলি শিকদার, সংশপ্তকের প্রোগ্রাম ম্যানেজার জয়নাব বেগম চৌধুরী, মমতার সিনিয়র ট্রেনিং অফিসার রুহুল মোহিদ চৌধুরী, কমিউনিটি লিডার ও ট্রেড ইউনিয়নের সভাপতি এবং বিভিন্ন নির্যতিত শ্রমিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর মো:ইব্রাহিম খলিল ভূঁইয়া, । তিনি আওয়াজ ফাউন্ডেশনের জিবিভি প্রজেক্ট এর সফলতা ও চ্যালেঞ্জ সমূহ উপস্থাপন করেন। তিনি টার্গেটকৃত এলাকা সমূহের নির্যাতিত নারীদের সমস্যা সমূহ উপস্থাপন করে সবার মনযোগ আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, লিগ্যাল আছে বলে দরিদ্র ও শ্রমজীবি মানুষের জন্য ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হচ্ছে।
প্রধান অতিথি রাজিয়া সুলতানা, তাঁর বক্তব্যের শুরতেই সকল শহীদের প্রতি গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং সকলকে বসন্তের শুভেচ্ছা জানান। তারপর তিনি উক্ত ডায়ালগ সম্পর্কে বলেন : পরিবারে, এলাকায়, কারখানায় নির্যাতন বন্ধে সকলে মিলে একসাথে কাজ করতে হবে। নারীরা এখন ও বৈষম্যের স্বীকার। তাদের প্রতি বৈষম্য দূর করতে হবে, নারী-পুরুষ একসাথে কাজ করতে হবে, নারীর প্রতি অবমাননা আর না। যতদিন পর্যন্ত নারীরা নির্যাতন মুক্ত না হবে ততদিন আমাদের সবাইকে চেস্টা চালিয়ে যেতে হবে এবং এ বিষয়ে নারী-পুরুষ সকলেই কাজ করতে হবে। বিশেষ করে এজন্য লিগ্যাল এইডের সকল প্যানেল আইনজীবিদের আরও আন্তরিক হতে হবে। তিনি আরও বলেন বর্তমান সরকার ব্যবস্থায় পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও এগিয়ে যাচ্ছে তাই পরিবার , সমাজ ও কারখানায় নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই হবে। লিগ্যাল এইডের তথ্য হয়রানি প্রতিরোধে সকল পাড়ায় ও মহল্লায় জানানো াপ্রয়োজন রয়েছে। তিনি সকলকে আওয়াজ ফাউন্ডেশন এর মতো করে সব রকমের হয়রানি বন্ধে নিয়মিত কাজ করার জন্য আহবান করেন।
লিগ্যাল এইড অফিস এসিসট্যান্ট,মোহাম্মদ এরশাদুল ইসলাম, এমন সুন্দর একটা অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য আওয়াজ ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানান।তিনি বলেন লিগ্যাল এইড সবসময় আন্তরিক ও সেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত, শুধু হয়রানি সম্পর্কে নয় নারীদের যেকোন বিষয়ে/ অভিযোগ নিয়ে অফিসে এসে কথা বলতে পারবেন।তাদের কথা শুনার জন্য আলাদা ব্যাবস্থা রয়েছে। এছাড়া উপরোল্লিখিত সকল অতিথি ও ট্রেড ইউনিয়নের নেত্রী বৃন্দ, গ্রুপ সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন ফ্যাক্টরীর শ্রমিকবৃন্দশ্রমিক নারীর প্রতি নির্যাতন প্রতিরোধ করতে তাদের অজানা প্রশ্ন ডায়ালগের মাধ্যমে গুরুত্ব ফুটিয়ে তোলেন ।তাছাড়া সকল আইনজীবি ডায়ালগে পারিবারিক সহিংসতা বন্ধের উপায় , অভিযোগ ও মামলা সম্পর্কে সকলের প্রশ্ন এবং আলোচনা অনুসারে বক্তব্য রাখেন।এছাড়া সকল প্যানেল আইনজীবি ও এনজিও প্রতিনিধিবৃন্দ সহ সবাই ডায়লগে প্রাণবন্ত অংশগ্রহণ করেন।
একটি তৃনমূল সংগঠন প্রতিষ্ঠান এ সংস্থার কাজ মূলত পোশাকশিল্পে সকল শ্রমিকের বিশেষ করে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করা। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বুনিয়াদের অন্যতম ভিত্তি পোষাক শিল্প যা দেশের রপ্তানি আয়ের ৮২% এই উৎস থেকে আসে এবং এ শিল্পের সিংহভাগকর্মী নারী। এ শিল্পের স্থায়িত্বশীলতার জন্য ইতোমধ্যে আওয়াজ ফাউন্ডেশন নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে আসছে। আর এর একটি অংশ হিসেবে“জেন্ডার বেইসড ভায়োলেন্স” বা লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও মোকাবেলা কর্মসূচীর আওতায় নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ ও ‘আওয়াজ ফাউন্ডেশন’ যৌথভাবে তৈরী পোশাকশিল্প কারখানায় বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। তারই অংশ হিসেবে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন “কর্মক্ষেত্রে নারী শ্রমিকদের যৌন হয়রানি, সংগ্রাম এবং উত্তরণের উপায়” শীর্ষক এক গবেষণাপত্র সম্পন্ন করেছে। বিভিন্ন পোষাকশিল্প কারখানায় যৌন হয়রানির বর্তমান অবস্থা, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট,নারীদের বর্তমান অবস্থা, প্রতিরোধ এবং উত্তরণের উপায় পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় উক্ত লিগ্যাল এইডের সাথে নির্যাতিত নারী শ্রমিকদের ও অন্যান্য সরকারী-বেসরকারী স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে এক ডায়ালগ মিটিংয়ের আয়োজন করেন।
পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় দায়িত্ব পালন করেছেন, ইসরাত জাহান চৌধূরী, প্রজেক্ট অফিসার, আওয়াজ ফাউন্ডেশন, চট্টগ্রাম।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি
Leave a Reply